তরল-তরল দ্রবন

Posted by Md. Mamunur Rashid On 0 মন্তব্য(গুলি)


তরল-তরল দ্রবন

বিজ্ঞানী রাউল্ট ১৮৮৭ সালে বাষ্পচাপের অবনমনের সূত্র প্রদান করেন

  • রাউল্টের সূত্রের প্রযোজ্যতা :
১. দ্রবণ অনুদ্বায়ী হলে
২. তড়িৎ অবিশ্লেষ্য হলে
৩. দ্রবণ লঘু হলে (যত লঘু তত ভাল)

  • সীমাবদ্ধতা :
১. ঘনমাত্রা বাড়ালে এর বিচ্যুতি দেখা যায়
২. এ সূত্রে তাপমাত্রার কোন উল্লেখ নেই
৩. বাষ্পচাপের অবনমনের মান সকল তাপমাত্রায় সমান হয়ে যায়

  • তরল বায়ুর তিনটি উপাদান নাইট্রোজেন, অক্সিজেন ও আর্গনকে আংশিক পাতনের সাহায্যে পৃথক করা যায়
  • সমসত্ত্ব মিশ্রণের অপর নাম দ্রবণ
  • পোলার তরল পদার্থগুলোর ডাই ইলেক্ট্রিক ধ্রুবক বেশি
  • ধনাত্মক ও ঋণাত্মক মাত্রা খুব বেশি হলে সমস্ফুটন মিশ্রণ তৈরি হয়
  • একাধিক তরলের মিশ্রণকে অংশ অংশ করে পাতিত করে পৃথক করার প্রক্রিয়াকে আংশিক পাতন বলে
  • আংশিক পাতন প্রণালীর সাহায্যে তরল-তরল দ্রবণের উপাদানসমূহ পৃথকীকরণ করা হয়; দ্রবণের উপাদানসমূহের স্ফুনাংক ভিন্ন হলে সাম্যাবস্থায় দ্রবণের সংযুক্তি এবং বাষ্পের সংযুক্তি ভিন্ন হয়
  • 95.6% ইথানল (স্ফুনাংক 78.3ᵒC) এবং 4.4% পানির (100ᵒC) সমস্ফুটন মিশ্রণ রেকটিফাইড স্পিরিট এর স্ফুনাংক 78.1ᵒC
  • কার্বন ডাই-সালফাইড ও প্রপানলের দ্রবণ একটি সমস্ফুটন মিশ্রণ
  • দ্রাব্যতা তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে
  • পানিতে KNO3 এর দ্রাব্যতা তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে বৃদ্ধি পায়
  • সকল গ্যাস সকল অনুপাতে পরস্পরের সাথে মিশ্রণীয়
  • কম উদ্বায়ী তরলের স্ফুটনাংক বেশি
  • সম্পূর্ণ মিশ্রণীয় তরল তরল দ্রবণের উপাদানসমূহ পৃথকীকরণ সাধারণত আংশিক পতন প্রণালী ব্যবহার করা হয়
  • আদর্শ দ্রবণের উপাদানসমূহ মিশ্রিত করার সময় তাপের কোন শোষণ বা উদগীরণ হয় না; অর্থাৎ ΔH=0
  • সাম্যাবস্থায় বিদ্যমান বাষ্পের অধিকতর উদ্বায়ী উপাদানের আনুপাতিক পরিমাণ বেশি থাকে
  • যে স্থির স্ফুটনাংক মিশ্রণের স্ফুটনাংক তার উপাদানদ্বয়ের প্রত্যেকটির স্ফুটনাংক অপেক্ষা বেশি তাকে সর্বোচ্চ স্থির স্ফুটনাংক মিশ্রণ বলে
  • যে মিশ্রণের বস্তুকণার আকার 10-7cm বা এরচেয়ে ছোট তাকে দ্রবণ বলে
  • সমসত্ত্ব মিশ্রণে কণার আকার 10-7cm থেকে 10-4cm হলে একে কলয়ডাল সিস্টেম বলে
  • ধাতুর সংকরগুলো একাধিক ধাতুর সমসত্ত্ব মিশ্রণ অর্থাৎ কঠিন-কঠিন দ্রবণ; যেমন- ব্রাস বা পিতল, স্টেইনলেস স্টিল

        v.            আংশিক পাতন : একাধিক তরলের মিশ্রণকে অংশ অংশ করে পাতিত করে পৃথক করার পদ্ধতিকে আংশিক পাতন বলে

  • মূলনীতি :
 ১. সাম্যাবস্থায় কোন তরল তরল দ্রবণের বাষ্পে অধিক উদ্বায়ী তরলের মোল ভগ্নাংশ বা মাত্রা বেশি
 ২. দ্রবণে কম উদ্বায়ী তরলের মোল ভগ্নাংশ বা মাত্রা বেশি

প্রয়োগ :
১. অশোধিত পেট্রোলিয়াম তেলের উপাদানসমূহকে পরিশোধন বা পৃথকীকরণ
২. তরল বায়ুর উপাদানসমূহকে পৃথকীকরণ
৩. রেকটিফাইড স্পিরিট উৎপাদন
৪. আলকাতরার অংশ পাতন
৫. সমস্ফুটন মিশ্রণের উপাদানসমূহকে আংশিক পাতন প্রণালীতে ‍পৃথক করা যায় না

  • আংশিক পাতনের তত্ত্ব :
১. সাধারণত কোন তরল-তরল মিশ্রণের উপরিস্থিত বাষ্পের সংযুক্তি মিশ্রণের সংযুক্তির সমান নয়
২. আদর্শ তরল-তরল দ্রবণের সব ক্ষেত্রে তরল অবস্থা অপেক্ষা তার বাষ্পে অধিকতর উদ্বায়ী উপাদানের আনুপাতিক পরিমাণ বেশি থাকে
৩. কোন আদর্শ তরল মিশ্রণকে উত্তপ্ত করলে উৎপন্ন বাষ্পে অধিক উদ্বায়ী উপাদান অধিকতর অনুপাতে থাকে, এ বাষ্পকে ঘনীভূত করলে প্রাপ্ত তরল মিশ্রণে মূল তরল মিশ্রণ অপেক্ষা অধিক উদ্বায়ী উপাদানের আনুপাতিক পরিমাণ আরো বাড়ে
৪. উপরোক্ত পাতন প্রক্রিয়ায় পাপ্ত তরল মিশ্রণকে আবার পাতিত করলে যে তরল মিশ্রণ পাওয়া যায়, তাতে উদ্বায়ী উপাদানের আনুপাতিক পরিমাণ আরো বাড়ে
৫. এভাবে প্রতি বার বাষ্পের ঘনীভূত তরল অংশ নিয়ে বার বার পাতন প্রক্রিয়া চালাতে থাকলে প্রতিক্ষেত্রে পাতিত মিশ্রণে অধিকতর উদ্বায়ী উপাদানটি প্রায় বিশুদ্ধ অবস্থায় পাতিত হয়
৬. অপরদিকে তরল মিশ্রণ থেকে অধিকতর উদ্বায়ী উপাদানটি অধিক আনুপাতিক হারে বাষ্পে চলে যাওয়ায় শেষে পাতনপাত্রে কম উদ্বায়ী উপাদানটি প্রায় বিশুদ্ধ অবস্থায় থেকে যায়
৭. বার বার পাতন প্রক্রিয়া করা সময়সাপেক্ষ এবং অসুবিধাজনক; তাই অংশীকরণ স্তম্ভ ব্যবহার করে পাতন করলে একই পাতন কাজ সরাসরি একবারে এবং খুব কম সময়ে করা যায়

আংশিক পাতনের সীমাবদ্ধতা : যে সব তরল-তরল মিশ্রণের বাষ্পচাপ সংযুক্তি লেখচিত্রে সর্বোচ্চ বা সর্বনিম্ন বিন্দু থাকে, কেবলমাত্র তাদের ক্ষেত্রে উক্ত দুটি বিন্দুতে তরল মিশ্রণ ও এর বাষ্পের সংযুক্তি একই হয়। ধনাত্মক বিচ্যুতি সম্পন্ন অনাদর্শ তরল-তরল মিশ্রণের বাষ্পচাপ-সংযুক্তি লেখচিত্রে একটি সর্বোচ্চ বিন্দু এবং ঋণাত্মক বিচ্যুতি সম্পন্ন অনাদর্শ তরল-তরল  মিশ্রণের বাষ্পচাপ-সংযুক্তি লেখচিত্রে একটি সর্বনিম্ন বিন্দু। এ উভয় বিন্দুর তরল-তরল মিশ্রণ দ্বারা সমস্ফুটন মিশ্রণ উৎপন্ন হয়। আংশিক পাতন দ্বারা সমস্ফুটন মিশ্রণের উপাদানসমূহকে পৃথক করা সম্ভব হয় না। কারণ সমস্ফুটন মিশ্রণের নির্দিষ্ট সংযুক্তির মোট বাষ্পচাপ বায়ুমণ্ডলের চাপের সমান হয়, তাই সমস্ফুটন মিশ্রণটি একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় ফুটতে থাকে।

        v.            কিছু গুরুত্বপূর্ণ তরল-তরল দ্রবণ :
তরল-তরল দ্রবণ
উদাহরণ
সম্পূর্ণ/ মিশ্রণীয় তরল-তরল দ্রবণ
১. পানি ও ইথানল
২. পানি ও HCl
৩. পানি ও 2SO4
৪. পানি ও CH3COOH
৫. বেনজিন ও টলুইন
৬. N2 O2 এর তরল-তরল মিশ্রণ
৭. পানি ও HNO3
৮. হেক্সেন ও বেনজিন
আংশিক মিশ্রণীয় তরল-তরল দ্রবণ
১. অ্যানিলিন ও হেক্সেন
২. পানি ও ফেনেল
৩. পানি ও নিকোটিন
৪. পানি ও ইথার
সম্পূর্ণ/প্রায় অমিশ্রণীয় তরল-তরল দ্রবণ
১. পানি ও CCl4
২. পানি ও বেনজিন
৩. পানি ও পারদ
৪. পানি ও CHCl3

ধনাত্মক বিচ্যুতি সম্পন্ন তরল-তরল দ্রবণ
১. ডাই-ইথাইল ইথার ও অ্যাসিটোন
২. ইথানল ও পানি
৩. ইথিলিন ক্লোরাইড ও ইথিলিন ব্রোমাইড
৪. ইথাইল ইথানয়েট ও পানি
ঋণাত্মক বিচ্যুতি সম্পন্ন তরল-তরল দ্রবণ
১. পানি ও H2SO4
২. হ্যালোজেন হাইড্রাসিড (HCl, HBr, HI) ও পানি
৩. HCl ও পানি
৪. HNO3 ও পানি
৫. পিরিডিন (C5H5N) ও ইথানোয়িক এসিড
৬. মিথানল ও পানি


  • কলিগেটিভ ধর্মসমূহ :
 ১. বাষ্পীয় চাপ অবনমন
 ২. স্ফুটনাংক উন্নয়ন
 ৩. হিমাংক অবনমন
 ৪. অসমোটিক চাপ

        v.            অশোধিত পেট্রোলিয়ামের আংশিক পাতন এবং প্রাপ্ত বিভিন্ন অংশ :

মূল ও উপাংশ
কার্বন পরমাণুর আনুষাঙ্গিক সংখ্যা
স্ফুটনাংক, ᵒC (তাপমাত্রা)
ব্যবহার

হালকা গ্যাস
C1-C4
20 পর্যন্ত
জ্বালানি হিসেবে

মিথেন ও ইথেন
C1-C4
20 পর্যন্ত
জ্বালানি হিসেবে

অ্যাসিটিলিন, ইথিলিন, প্রপাইলিন ও বিউটাইলিন
C1-C4
20 পর্যন্ত
অ্যালকোহল, রাবার ও প্লাস্টিক তৈরির কাঁচামাল হিসেবে

গ্যাসোলিন
C5-C11
20-200
মোটরগাড়ির জ্বালানি হিসেবে

পেট্রোলিয়াম ইথার
C5-C6
30-60
দ্রাবক হিসেবে

লিগ্রাইন
C6-C8
60-100
দ্রাবক হিসেবে

ন্যাপথা
C8-C11
100-300
দ্রাবক হিসেবে
কেরোসিন
C12-C16
200-300
জ্বালানি ও দ্রাবক হিসেবে
লুব্রিকেটিং তেল
C16-C20
300
পিচ্ছিলকারক হিসেবে
ভ্যাসেলিন
C18-C22
380
পিচ্ছিলকারক হিসেবে ও ওষুধ তৈরিতে
প্যারাফিন মোম
C20-C30
(গলনাংক) 50-60
পানি প্রতিরোধক, সিলগালা ও মোমবাতি তৈরিতে
আলকাতরা
>C30

পেইন্ট ও রাস্তাঘাটে তৈরির কাজে
পেট্রোলিয়াম কোক
>C30

কার্বন ইলেক্ট্রোডে

0 মন্তব্য(গুলি) to তরল-তরল দ্রবন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Blogger দ্বারা পরিচালিত.

Ads

Social Icons

Featured Posts